একাত্তরে কেমন ছিল পাকিস্তানপন্থী বাঙ্গালীদের ভূমিকা?

1-6
বন্ধুরাষ্ট্রের বোমা হামলা
7
ফ্যাসিস্ট ভুট্টোর কারণেই যুদ্ধ শুরু হয়েছে: বায়তুল মোকাররমের জনসভায় গোলাম আযম
১৭ অক্টোবর ১৯৭১
দৈনিক সংগ্রাম
8
ফ্যাসিস্ট ভুট্টোর কারণেই যুদ্ধ শুরু হয়েছে: বায়তুল মোকাররমের জনসভায় গোলাম আযম
১৭ অক্টোবর ১৯৭১
দৈনিক সংগ্রাম
9
ভুট্টোর অপরাধের দায় পশ্চিম পাকিস্তান এবং পূর্ব পাকিস্তানের ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী দেশপ্রেমিক নেতৃত্বের না। খোদ পশ্চিম পাকিস্তানেই মুজিবের সমর্থনে ভুট্টোবিরোধী রাজনৈতিক জোট তৈরী হয়েছিল।
10
জামাতের মিয়া তোফায়েল, গফুর খানসহ পশ্চিম পাকিস্তানের প্রায় সব নেতা ভুট্টোকে পাকিস্তান ভাঙ্গার চক্রান্তের দায়ে অভিযুক্ত করে অবিলম্বে মুজিবের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবী জানান।
দৈনিক ইত্তেফাক
১৩ই মার্চ, ১৯৭১
11
অবিলম্বে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি তথা মুজিবের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন: গোলাম আযম
১০ই মার্চ ১৯৭১
দৈনিক ইত্তেফাক
12
আওয়ামী লীগের হাতেই ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে, ভুট্টো পাকিস্তান ভাঙ্গার ষড়যন্ত্র করছে: নুরুল আমিন, গোলাম আযমসহ বাঙ্গালী-অবাঙ্গালী সকল পাকিস্তানপন্থী নেতা ও দল
দৈনিক সংগ্রাম ১৬ই মার্চ, ১৯৭১
13
জামাতের মুখপত্র দৈনিক সংগ্রামের কাভারেজ: জামাতসহ গোটা পাকিস্তানের সবার দাবী মুজিবের হাতে অবিলম্বে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।
14
৭ই মার্চের ভাষণে মুজিব যেসব দাবী জানিয়েছেন তা মেনে নিতে হবে: জামাতের মুখপত্র দৈনিক সংগ্রাম
15
জামাতের মুখপত্র দৈনিক সংগ্রামের কাভারেজ।
16
বিদেশে মুজিবের বিরুদ্ধে ভুট্টোর প্রচারণার প্রতিবাদে জামাতের মুখপত্র দৈনিক সংগ্রামের প্রতিবেদন।
১২ই মার্চ ১৯৭১
17
ভুট্টোর দাবী অযৌক্তিক, অবিলম্বে মুজিবের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন: জামাতের অস্থায়ী আমীর মিয়া তোফায়েল
১৬ই মার্চ ১৯৭১ দৈনিক সংগ্রাম
18
দেশ বাঁচাতে শেখ মুজিবের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে: জামাতের মুখপত্র দৈনিক সংগ্রাম
১১ই মার্চ, ১৯৭১
19
মুজিব সারা পাকিস্তানের নেতা: মওদূদী প্রধানমন্ত্রী হতে না পেরে ভুট্টো পাকিস্তান ভাঙ্গার চক্রান্ত করছে: জামাত নেতা আব্বাসী
দৈনিক সংগ্রাম ২৮শে ফেব্রুয়ারি, ১৯৭১
20
সর্বস্তরে বাংলা চালুর দাবী মতিউর রহমান নিজামীর।
১লা ফেব্রুয়ারী ১৯৭১ দৈনিক সংগ্রাম
21
দেশে তখন বিহারী গণহত্যা চলছিল। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দেশের বিভিন্ন স্থানে গঠিত হতে থাকে শান্তি কমিটি।
১১ই মার্চ ১৯৭১ দৈনিক আজাদী
22
ভুট্টোর উসকানী সত্ত্বেও মুজিব পাকিস্তান ভাংবে না: আওয়ামী লীগ
23
১৯৭১ সালের ২৩শে মার্চ পাকিস্তান দিবসে অবিলম্বে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি তথা মুজিবের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবী জানিয়ে জামাতের মুখপত্র দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদকীয়। উল্লেখ্য, সম্পাদকীয় পত্রিকার নিজস্ব বক্তব্য। অর্থাত, এটিই পত্রিকার অবস্থান।
24
মুজিবের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানার প্রতিবাদে ভুট্টো এবং ইয়াহিয়ার বিরুদ্ধে গোলাম আযমের বিবৃতি।
৮ই মার্চ, ১৯৭১ দৈনিক সংগ্রাম
25
১১ই মার্চ ১৯৭১ ঈসায়ীতে জামাতের মুখপত্র দৈনিক সংগ্রামের প্রথম পাতা। কি মনে হয় যে জামাত "বাঙালী"র পক্ষে না বিপক্ষে ছিল? মুজিবের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের পক্ষে ছিল না বিপক্ষে ছিল?
26
নেজামে ইসলামসহ বহু দল ভুট্টোর চক্রান্ত প্রতিহত করে মুজিবের হাতে পাকিস্তানের ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবী জানিয়েছিল। কিন্তু তাদের প্রায় সবাই পরবর্তীতে গৃহযুদ্ধে ভারতের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন।
দৈনিক সংগ্রাম ১১ই মার্চ ১৯৭১
27
১১ই মার্চ ১৯৭১ জামাত নিয়ন্ত্রিত শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন (বর্তমানে এর সভাপতি জামাতের নায়েবে আমীর আ ন ম শামসুল ইসলাম) মুজিবকে "বাঙলার স্বাধিকার আন্দোলনের নেতা" ঘোষোনা দিয়ে মুজিবের কাছে অবিলম্বে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবী জানায়। ততকালীন শ্রমিক কল্যান ফেডারেশনের নেতা ব্যারিস্টার কোরবান আলী জামাত এবং বাংলাদেশের ইসলামী রাজনীতির ইতিহাসের একজন কিংবদন্তী।
28
সামরিক শাসন মানি না, ভুট্টো বদমাশ, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি তথা মুজিবের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে: গোলাম আযম
১৮ই মার্চ ১৯৭১ দৈনিক সংগ্রাম
29
পূর্ব পাকিস্তানে মুজিব এবং পশ্চিম পাকিস্তানে ভুট্টোকে ক্ষমতা দেওয়ার প্রস্তাব করে ভুট্টো। এই প্রস্তাবের নিন্দা জানায় জামাতসহ বহু রাজনৈতিক দল। তারা এককভাবে ভুট্টোকে দেশের অচলাবস্থার জন্য দায়ী করে এবং মুজিবের হাতে গোটা পাকিস্তানের ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবী জানায়।
১৭ই মার্চ ১৯৭১ দৈনিক সংগ্রাম
30
"নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা উচিত। শেখ সাহেবকে জাতীয় নেতা হিসাবে মেনে নিতে আর কোন গড়িমসিই হওয়া উচিত নয়।"
১৯৭১ সালের ১০ই মার্চ জামাতে ইসলামীর মুখপত্র দৈনিক সংগ্রাম
31
জামাতের জনসভায় (১) ২৩ বছর পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী পাকিস্তানকে শোষণ করেছে বলা হয়। (২) আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদের নিন্দা জানানো হয়। (৩) আওয়ামী লীগ স্বায়ত্তশাসনের দাবীর সোল এজেন্ট দাবী করে অথচ আওয়ামী লীগই স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলনকে স্যাবোটাজ করেছে বলা হয়। এসময় বক্তব্যে স্বায়ত্তশাসনের পক্ষে অবস্থান নেওয়া হয়।
১৯ মার্চ ১৯৭০ দৈনিক সংগ্রাম
32
পূর্ব পাকিস্তানের পুর্ণ আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের দাবী জানায় জামাত।
১৯ই মার্চ, ১৯৭০ দৈনিক সংগ্রাম
33
"জামায়াত ক্ষমতায় গেলে দেশের সমস্ত বৈষম্য দূর করে পূর্ব পাকিস্তানের ওপর যে অবিচার করা হয়েক্সহে তা কড়ায়-গণ্ডায় আদায় করা হবে" : পাকিস্তান জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুর রহীম
১০ই মার্চ ১৯৭০ দৈনিক সংগ্রাম
34
পশ্চিম পাকিস্তান পূর্ব পাকিস্তানের ওপর বৈষম্য আসলেই করেছে কিনা তার চেয়ে বড় ব্যপার ছিল পূর্ব পাকিস্তানের জনগনের মনে এই ধারণা পাকাপোক্ত হয় যে বৈষম্য করা হচ্ছিল। এই জনগনের মধ্যে ইসলামী ছাত্রসংঘও ছিল। বৈষম্য দূর করতে সরকারের "নিষ্ক্রিয়তা"র বিরোধিতাও করে ছাত্রসংঘ।
১৭ই মার্চ ১৯৭০ দৈনিক সংগ্রাম
35
এই সংবাদ থেকে জানা যায় (১) যুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ায় জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে গোলাম আযম চিন্তিত ছিলেন। (২) জাতীয় পরিষদে জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রস্তাব তুলেছিলেন। (৩) সোভিয়েতপন্থী ভুট্টো-মুজিবের দিকে ইঙ্গিত করে পাকিস্তানের অখণ্ডতার জন্য তাদের হুমকি বলেছিলেন। (৪) পাকিস্তান সেনাবাহিনী, রাজাকার বাহিনীসহ অন্যান্য বাহিনীর মূখ্যত "সেকুলার" চরিত্রেএ কারণে সেখানে ব্যক্তিগত বা অন্যান্য স্বার্থ দ্বারা তাড়িত লোকদের মাধ্যমে যে ইন্ডিয়া ব্যাকড ফোর্সকে দমন করা যাবে না এটা গোলাম আযম অনুধাবন করেছিলেন। গরুচোর, পাশের বাড়ির বৌ ধর্ষণকারী "সেকুলার"দের দিয়ে গঠিত রাজাকার বাহিনী যে ইন্ডিয়ান ব্যাকড ফোর্সকে দমন করতে ব্যর্থ সেটার ঘোষণা দিয়ে গোলাম আযম আদর্শিকভাবে উজ্জীবিত লোকদের হাতে অস্ত্র দেওয়ার আহ্বান জানান।
১৯শে জুন ১৯৭১
36
ভুট্টো এবং মুজিব পাকিস্তানকে ধ্বংস করে দিচ্ছে জানিয়ে গোলাম আযম বলেন- "এ প্রসংগে তিনি বলেন, গত তেইশ বছর কেন্দ্রীয় সরকার অবিচার না করলে বাঙ্গালী মুসলমানরা আরও অনেক উন্নতির দকে এগিয়ে যেতে পারতো। তিনি বলেন, গত ২৪ বছরে কৃত যাবতীয় বেইনসাফি থেকে মুক্তির প্রত্যাশায় জনগন নির্বাচনে ভোট দিয়েছিল। কিন্তু নির্বাচনে বিজয়ী দু'টো আঞ্চলিক দলের নেতা জনগনের সে প্রত্যাশাকে বানচাল করে দিয়েছে বলে জামায়াত নেতা উল্লেখ করেন। এপ্রসংগে তিনি বলেন, পূর্ব পাকিস্তানে জনাব শেখ মুজিব এবং পশ্চিম পাকিস্তানে জনাব ভুট্টো বাদশা সাকবার স্বীয় খায়েশ চরিতার্রগ করতে গিয়েই জনগনের আশা-আকাংখা নস্যাত করে দিয়েছেন। জামায়াত প্রধান বলেন, দেশের পূর্বাঞ্চলে স্বীয় নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে গুয়ে শেখ মুজিব দেশের অপর অংশের বিরুদ্ধে চরম ঘৃণ্য এবং বিদ্বেষের বীজ ছড়িয়েছেন। আর এ ঘৃণা এবং বিদ্বেষের ঝড় তিনি তুলেছেন বাংগালী স্বার্থের নামে। অধ্যাপক আযম বলেন, এর ফলে সমস্ত বাংগালী মুসলমানই আজ সন্দেহের শিকারে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, ২৪ বছর পর পূর্ব পাকিস্তানীরা দেশের কেন্দ্রীত সরকার পরিচালনার অধিকার পেতে চাচ্ছিল।..."
37
গোলাম আযম পূর্ব পাকিস্তানের কাছে পররাষ্ট্র এবং অর্থ মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব হস্তান্তরের দাবী জানিয়েছিলেন। অতীত অবিচারের অভিযোগগুলির সমাধান করে পূর্ব পাকিস্তানের আস্থা অর্জনের দাবী জানিয়েছিলেন। ইন্ডিয়া ব্যাকড মুক্তি তথা মুজিববাহিনী ছাড়া গোলাম আযমের পূর্ব পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কোন বক্তব্য একাত্তরে ছিলন্না। একাত্তরেও ভুট্টোর সাথে গোলাম আযমের তীব্র বিরোধ ছিল। *১৯৭০ সালের নির্বাচনে জয়ীদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবী পুনর্ব্যক্ত করেন গোলাম আযম*
38
ভুট্টো এবং মুজিব দুইজনের বিরুদ্ধেই জামাতের ছিল শক্ত অবস্থান। ভুট্টো এবং মুজিব দুইজন মিলে পাকিস্তানকে ধ্বংস করে দেবে এমন ভবিষ্যতবাণী জামাত একাত্তরের বহু আগে করেছিল।
39
টিক্কা খানের সাথে বৈঠকে কি কথা হয়েছিল গোলাম আযমের?
40
তুমিও জানো, আমিও জানি ছাত্র ইউনিয়ন পাকিস্তানি।
২৫ শে আগস্ট, ১৯৬৯। দৈনিক ইত্তেফাক।
40
ভুট্টোর ক্যাবিনেটের শক্তিশালী সদস্য ছিলেন কাওসার নিয়াজী। ভুট্টোর দল গোটা ১৯৭১ জুড়ে "মৌলবাদী" জামাতকে ইন্ডিয়ার দালাল, মুজিবের দালাল বলে গেছে। তারা এটাও বলেছে যে জামাত না বরং পূর্ব পাকিস্তানের "প্রগতিশীল"দের সাথে হাত মিলিয়ে তারা সরকার গঠন করবে। এই প্রগতিশীল কে বা কারা? এদেরকে আমরা চিহ্নিত করতে পেরেছি? কোন শাস্তি হয়েছে এদের?